News Details

আজ ‘বিশ্ব পানি দিবস’



আজ ‘বিশ্ব পানি দিবস’। এবারের প্রতিপাদ্য-‘ভূগর্ভস্থ পানি : অদৃশ্য সম্পদ, দৃশ্যমান প্রভাব।’ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি বছর ২২ মার্চ ‘বিশ্ব পানি দিবস’ হিসাবে পালিত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যসব দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবস পালিত হবে। দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেজ, বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আব্দুল হামিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

 

পরিকল্পিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার আহ্বান জানিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) ‘বিশ্ব পানি দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ আহ্বান জানান তিনি। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, নদীমাতৃক কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন এবং সামগ্রিক উন্নয়নে সঠিক ও পরিকল্পিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার ভূমিকা অপরিসীম। দেশে ফসল উৎপাদন, সেচ ও গৃহস্থালি কাজে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাটির নিচে পানির আধার সুরক্ষা ও পানির গুণাগুণ বজায় রাখতে ভূপরিস্থ ও ভূগর্ভস্থ পানির সমন্বিত ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব পানি দিবস’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ ঘোষিত এ বছরের বিশ্ব পানি দিবসের প্রতিপাদ্য ‘গ্রাউন্ডওয়াটার- মেকিং দ্য ইনভিজিবল ভিজিবল’ সামগ্রিক বিবেচনায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রাপ্তির অনিশ্চয়তার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন, পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়ছে। আবার অতিবৃষ্টি, বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণেও জনদুর্ভোগ এবং সম্পদের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার দেশে পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নদী ড্রেজিং, খাল পুনঃখনন, প্রাকৃতিক জলাধার রক্ষণাবেক্ষণ এবং নতুন জলাধার ও ব্যারেজ নির্মাণের কার্যক্রম নিয়েছে। একইসঙ্গে নদীর তীর সংরক্ষণ, পানি অবকাঠামো সংস্কার করে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, ভূমি পুনরুদ্ধার, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, অংশগ্রহণমূলক পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং প্রতিবেশ ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

 

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, এসব কার্যক্রমের পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্পের গুনগত মান ও কৌশলগত কার্যকারিতায় নতুন ভাবনা ও প্রযু্ক্তির সংযোজন করা হচ্ছে। সঠিক পানি ব্যবস্থাপনায় সরকারের এসব উন্নয়ন কার্যক্রম ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি ‘বিশ্ব পানি দিবস -২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত কার্যক্রমের সফলতা কামনা করছি।

 

সোমবার এক বাণীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এ বছর বিশ্ব পানি দিবসের প্রতিপাদ্য সময়োপযোগী ও যথাযথ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ভূগর্ভস্থ পানির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নদী ভাঙন রোধ, ভূমি পুনরুদ্ধার, জলাবদ্ধতা দূরীকরণে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যা দেশের জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সহিষ্ণু ব-দ্বীপ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন করেছে। এ পরিকল্পনার স্বাদু পানির উপকৌশল ১ দশমিক ৪ এর আওতায় ভূগর্ভস্থ পানি সুরক্ষা অঞ্চল নির্ধারণ ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের নির্দেশনা রয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদা লাভ করবে। বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষ্যে তিনি নদীমাতৃক বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং দিবসের সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।